দেখার হাওরে মাটিখেকোদের থাবা
- আপলোড সময় : ২৪-১২-২০২৪ ১০:৩৭:৫৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৪-১২-২০২৪ ১০:৩৭:৫৮ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের দেখার হাওরের পশ্চিম পাড় সংলগ্ন গোবিন্দগাও কাঠইর মৌজার মালিকানাধীন ও সরকারি গোচারণ ভূমির মাটি হরিলুট চলছে। হাওরজমি থেকে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি উত্তোলন করে দেদারসে বিক্রি করছে প্রভাবশালী মাটিখেকো সিন্ডিকেট।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমাইল রহমান দেখার হাওরে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোছা. পারভিন আক্তারকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। পরে মোছা. পারভিন আক্তার সরেজমিন গিয়ে এস্কেভেটরের মালিক মহিবুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, সুহেল মিয়া, মনসুর আলী, সায়েম মিয়াকে মাটি উত্তোলন না করার জন্য নিষেধ করেন।
স্থানীয় মদনপুর গ্রামের কৃষক জয়নাল হাজারী জানান, আজ প্রায় তিন বছর যাবৎ মহিবুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, সুহেল মিয়া, মনসুর আলী, সায়েম মিয়া গং সরকারি ও মালিকানাধীন গোচারণ ভূমি থেকে অবৈধভাবে ৩টি ভ্যাকু ও অর্ধশতাধিক ট্রাক্টর দ্বারা মাটি উত্তোলন করে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৫শত টাকা ট্রাক প্রতি মাটি বিক্রি করছেন। তারা স্থানীয় কৃষক এবং প্রশাসনের নিষেধ না মেনে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করে যাচ্ছেন।
৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাদেক আলী জানান, দেখার হাওরের কাঠইর মৌজার গোচারণ সরকারি ভূমি সংলগ্ন আমার অনেক এজমালি ভূমি রয়েছে। কিন্তু ওই চক্র প্রভাবশালী হওয়ার কারণে জমির মালিক হয়েও মানসম্মানের ভয়ে কিছুই করতে পারছি না। হাওর থেকে ট্রাক্টর মাটি নিয়ে মহাসড়কে ঝুকির মধ্যে উঠে। এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যে কোন মূহূর্তে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে।
মদনপুর গ্রামের কৃষক আমির উদ্দিন জানান, দেখার হাওর সংলগ্ন কাঠইর মৌজার সরকারি গোচারণ ভূমির পাশেই আমার এক একর ভূমি রয়েছে। আমাকে না জানিয়ে আজ তিন বছর যাবৎ মহিনুর সহোদর শাহিনুর, সুহেল মিয়া, মনসুর আলী, সাইফুল ইসলাম গং জোরপূর্বক গরু, মহিষ, ছাগল চড়ানো এবং ধানের খলার জায়গা থেকে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছে। সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সড়ক নির্মাণ করেছে। কিন্তু ট্রাক্টর মাটি নিয়ে এই রাস্তায় চলাচলের কারণে কার্পেটিংয়ের উপর মাটির প্রলেপ পড়ায় সড়ক ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কুয়াশায় রাতে এবং ভোরে পিচ্ছিল সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
ট্রাক্টর ও এস্কেভেটর ভ্যাকুর মালিক মাটি বিক্রেতা মহিনুর রহমান জানান, আমি মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছি ঠিক আছে। কিন্তু আমার মতো অন্য যারা মাটি বিক্রি করে তাদের বিষয়েও লিখবেন যেন।
ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমাইল রহমান মহোদয় দেখার হাওরে ভ্যাকু দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ পেয়ে উপ-সহকারী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোছা. পারভিন আক্তারকে হাওরে পাঠানোর পর তিনি ভ্যাকুর ড্রাইভার এবং ট্রাকের মালিকদের মাটি উত্তোলন না করার জন্য নিষেধ করেন। কিন্তু উনার নিষেধ অমান্য করে মাটি উত্তোলনের কাজ চলছে। ওদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট না করলে মাটি উত্তোলন বন্ধ হবে না।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসরাইল রহমান জানান, মোবাইল ফোনে মাটি উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে সরেজমিন গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছি। নিষেধ না মানলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ